বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলটির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য মো. আমিরুল ইসলাম (পারভেজ) খুনের মামলায় গ্রেপ্তার ২ জনকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত সোমবার এই আদেশ দেন। রিমান্ড প্রাপ্ত ২ জন হলেন শামীম রেজা ও মো. সুলতান।
গত শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতা–কর্মীদের কয়েক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ হয়। এর এক পর্যায়ে ফকিরাপুল বক্স কালভার্ট এলাকায় হামলার শিকার হন পুলিশ সদস্য আমিরুল (৩২)। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামীম রেজা এবং মো. সুলতান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, তাঁরা দুজন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁদের শনাক্ত করা হয়েছে।
শামীমকে গাইবান্ধা এবং সুলতানকে ঢাকার ডেমরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বিএনপির আরও ১৬৮ নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার
সোমবার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিএনপির ১৬৮ নেতা–কর্মীকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের আগের ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিএনপির এসব নেতা–কর্মীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ নিয়ে গত পাঁচ দিনে বিএনপির ১ হাজার ৭৫৯ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
নতুন করে গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা–কর্মীদের মধ্যে গেন্ডারিয়া থানার ১৩ জন, ওয়ারী থানার ২ জন, খিলক্ষেত থানার ২ জন, কলাবাগান থানার ২ জন, সবুজবাগ থানার ১ জন, রামপুরা থানার ২ জন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ৫ জন, হাতিরঝিল থানার ১ জন, মোহাম্মদপুর থানার ১ জন, রমনা থানার ৪ জন, কাফরুল থানার ৫ জন, পল্লবী থানার ৪ জন, পল্টন থানার ১৩ জন, শাহজাহানপুর থানার ১০ জন, মিরপুর থানার ৬ জন, দারুস সালাম থানার ২ জন, শাহ আলী থানার ৮ জন, বনানী থানার ৮ জন, ভাটারা থানার ৫ জন, বাড্ডা থানার ৫ জন, বংশাল থানার ২ জন, কোতোয়ালি থানার ৩ জন, লালবাগ থানার ৩ জন, কামরাঙ্গীরচর থানার ৬ জন, চকবাজার থানার ৩ জন, শ্যামপুর থানার ২ জন, কদমতলী থানার ৩ জন, উত্তরা পূর্ব থানার ৩ জন, তুরাগ থানার ১ জন, উত্তরা পশ্চিম থানার ২ জন, উত্তরখান থানার ১ জন, খিলগাঁও থানার ১০ জন এবং যাত্রাবাড়ী থানার ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিন দুপুরের পর গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা–কর্মীদের থানা থেকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। আর বিকেল চারটার পর শুনানি শেষে আবার হাজতখানা থেকে প্রিজন ভ্যানে করে তাঁদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।